কালীপূজা বা মা বড়মা পূজা হিন্দু দেবী কালীর পূজাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত একটি হিন্দু উৎসব. আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত সাংবাৎসরিক দীপান্বিতা মা বড়মা পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই দিন আলোকসজ্জা ও আতসবাজির উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা রাত্রিব্যাপী মা বড়মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। "মা বড়মার" পূজা বর্ধমান জেলার বিখ্যাত । মা বড়মা বড়বেলুন গ্রামে বিরাজ করেন। মা অানুমানিক ৫০০ বছরের পুরানো। মায়ের উচ্চতা ৩০ ফুট (১৪হাত) বা এক কথায় বলাই যায় দু-তলা বাড়ির সমান। মা বড়মার পুজোর দিন রাত্রিতেই মায়ের এই বিশালাকার মূর্তিতে রং করা হয়, সোলার সাজ, মালা, গয়না পরানো হয়। মা বড়মা খুব জাগ্রত । বহু জায়গা থেকে ভক্ত আসে মায়ের দর্শনের জন্য। প্রতি বছরই মায়ের পূজা খুব ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হয়। পূজা উপলক্ষে গ্রামে মেলারও আয়োজন করাহয়। মা বড়মা পূজা বড়বেলুনের ঐতিহ্য বাড়িয়ে তুলেছে।
বিবরন-
মা বড়মায়ের বিগ্রহ সারা বছর মন্দিরে স্থাপিত থাকে না। দূর্গাপূজার চারদিন পর কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিন মায়ের তৈরির কাজ শুরু করা হয়, ভাড়া (মই) খাটিয়ে মায়ের মূর্তি নির্মাণের করা হয়। সংযমের আগের দিন মায়ের মূর্তি গড়ার কাজ, দুমেটে সম্পূর্ণ হয়। সংযমের দিন মায়ের মূর্তিতে খড়িমাটি লাগানো হয়। পূজার দিন দুপুর থেকে মায়ের বিশালাকার মূর্তিতে রং করা হয়, সন্ধ্যায় ডাঁকের সাঁঝ লাগানো হয়, তারপর মায়ের প্রণামীতে আসা অসংখ্য বিশালাকার মালা, চাঁদমালা, পড়ানো হয়। ও মায়ের প্রণামিতে আসা বেনারসী শাড়ি কিছু সংখ্যক মায়ের হাতে তোলা হয়। এই পর্ব সম্পূর্ণ হলে আসে মায়ের গহনা । তারপর দুজন পুরোহিত আসে এবং তারা ভাড়ার উপরে উঠে মায়ের চক্ষুদান করেন। এই সব কিছু হয়ে গেলে ঘর পরিষ্কার করা হয়, ভাড়া খুলে দেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় পূজো। এরপর সারারাত ব্যাপি চলে পূজো ও বলিদান পর্ব। এইসব শেষ হতে হতে ভোর হয়ে যায়। সকালে মায়ের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সকাল থেকেই হাজার হাজার ভক্তের ভিড় হতে শুরু হয়ে গেছে। লাইন দিয়ে পূজা দেবার পর্ব শুরু হয়ে গেছে । সারাদিন মন্দির চত্বরে থাকে হাজার হাজার ভক্তের আনাগোনা । এই দিন মধ্যরাত্রিতে মায়ের ঘট বির্সজন করা হয়। পরের দিন সকালেও সেই একই ভিড় মায়ের মন্দির চত্বরে । লাইন দিয়ে ভক্তরা মায়ের পূজা দেন। দুপুর হতেই মায়ের গহনা খোলা হয়, ও মায়ের চারচাঁকা বিস্তৃত ইস্পাতের সাগর প্রস্তুত করা হয়। এই পর্ব সম্পূর্ণ হলে ৩:০০টে - ৩:৩০ নাগাদ মায়ের এই বিশালাকার মূর্তিটি ওই সাগরে বাঁধা হয়। বিকাল ৪:০০ টে নাগাদ মাকে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী বড়পুখুরে।
উল্লেখ্য, দীপান্বিতা কালীপূজার দিনটিতে ভারতের অন্যান্য জায়গায় দীপাবলি উৎসব পালিত হয়।
ঠিকানাঃ-
গ্রাম- বড়বেলুন
থানা- ভাতাড়
জেলা- বর্ধমান
★আসার পথ "ট্রেনে"- বর্ধমান থেকে ভাতাড় আসতে হবে. (বর্ধমানে আট নং প্লাটফর্ম) বর্ধমান থেকে ভাতাড় আসতে টাইম লাগবে ৩০ মিনিট (ভাড়া ৫ টাকা)
ভাতাড় থেকে মোটরভ্যান ধরে বড়বেলুন ( ভাড়া ৫ টাকা). টাইম ১৫ মিনিট..
●ট্রেনের টাইম বর্ধমান থেকে- 05:05 A.M, 7:15 A.M, 09:35 A.M, 02:05 P.M, 06:35 P.M, 08:50 P.M
★আসার পথ "বাসে"- বর্ধমান নবাবহাট বাসস্টাণ্ড থেকে অথবা ওভার ব্রিজ থেকে "বর্ধমান-মালডাঙ্গা" অথবা "বর্ধমান-কাটোয়া" বাস ভায়া বড়বেলুন ( জিজ্ঞাসা করে নেবেন বড়বেলুন যাবে কিনা) । টাইম লাগবে ৪০:০০-৫০:০০ মিনিট । ভাড়া- ২০/-
◆বড়বেলুনে "তেঁতুলতলা বাসস্টাণ্ড" নেমে ৫ মিনিট হাঁটলেই বড়কালী মায়ের মন্দির ।
Admin -Kshirod Prosad Bhattacharjee