Brahmanpara - ব্রাহ্মণপাড়া

Comilla, 3526
Brahmanpara - ব্রাহ্মণপাড়া Brahmanpara - ব্রাহ্মণপাড়া is one of the popular Home located in ,Comilla listed under Home in Comilla , Public places in Comilla ,

Contact Details & Working Hours

More about Brahmanpara - ব্রাহ্মণপাড়া

ব্রাহ্মণপাড়ার ইতিহাস:

ব্রাহ্মণপাড়া একটি প্রাচীন জনপদ। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বৃটিশ আমলে তা কসবা থানার অন্তভূক্ত ছিল। ১৯৫৪ সালে তা বুড়িচং থানার অন্তভূক্ত হয়। ১৯৬৮ সালে ব্রাহ্মণপাড়া ফাঁড়ি থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৬ সালে বুড়িপচং হতে আলাদা হয়ে প্রশাসনিক থানায় রূপ লাভ করে। ১৯৮৩ সালের ৭ নভেম্বর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলশ্রুতিতে উন্নয়নের প্রয়োজনে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় উন্নীত হয়।

জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি হতে দড়িয়ার পাড় হয়ে ষাইটশালা পযর্ন্ত যে নীচু ভূমি বর্তমানে পরিলক্ষিতহয় তা জুড়ে মোঘল আমলে (সম্ভবত বাদশাহ শাহ আলমের শাসনামলে) কালিদাহ সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলে ঘুংঘুর নদীর পূর্ব তীরে ইংরেজ কোম্পানীল বেনিয়ারা সতের শতকের গোড়ার দিকে বর্তমান উপজেলার এক কিলোমিটার দক্ষিণে বলদা (সাহেবাবাদ) মৌজার এক উচু স্থানে ব্যবসায়িক কুঠি স্থাপন করে। কোম্পানীর হিসাব রক্ষণের জন্য বারা নসী কাশি মুন্সি নামক একজন কান্যকুট ব্রাহ্মণ হিসাব রক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভবে করে। ব্রাহ্মণ মহাশয়ের বসতি স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই কোম্পানীর খাতায় এ স্থানের নাম ব্রাহ্মণপাড়া হিসেবে লিপিবদ্ধ নাম হয়। সেই থেকে এ উপজেলার নাম ব্রাহ্মণপাড়া হয়েছে।

ইউনিয়ন সমূহ:

মাধবপুর, শিদলাই, চান্দলা, শশীদল, দুলালপুর ,ব্রাহ্মণপাড়া সদর, সাহেবাবাদ, মালাপাড়া

ভৌগলিক পরিচিতি

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান উত্তর অক্ষাংশের ২৩°৬১' এবং ৯১°১১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। এ উপজেলার উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার কসবা উপজেলা, দক্ষিণাংশে বুড়িচং উপজেলা, পশ্চিমে দেবিদ্বার উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা।

ভাষা ও সংষ্কৃতি

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ওসংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই উপজেলাকে ঘিরে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য উপজেলাসমূহ। এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলার মতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থাৎ ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা রয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণাবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার আঞ্চলিক ভাষার সাথে সন্নিহিত ঢাকা অঞ্চলের ভাষার, চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম উাজেলার আঞ্চলিক ভাষায় নোয়াখালি এলাকার ভাষার অনেকটাই সামজ্ঞ্জস্য রয়েছে। মেঘনা-গোমতী নদীর গতি প্রকৃতি এবং লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে ব্রাহ্মণপাড়ার মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ব্রাহ্মণপাড়ার সভ্যতা বহুপ্রাচীন। এই এলাকায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও বৌদ্ধ বিহারেরধ্বংসাবশেষ প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসেবে দীপ্যমান।সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে ব্রাহ্মণপাড়ার অবদানও অনস্বীকার্য।

যেসব সরকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ব্রাহ্মণপাড়ায় কাজ করছে সেগুলো হলোঃ

* উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী, ব্রাহ্মণপাড়া
* সরকারী গণ গ্রন্থাগার, ব্রাহ্মণপাড়া
* প্রভৃতি।

খেলাধুলা ও বিনোদন

উপজেলা পর্যায়ে ভগবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ব্যতিত আর কোন খেলার মাঠ নেই। মাঠটি উপজেলা পরিষদের সন্নিকটে বাসষ্ট্যান্ড-এর পাশে অবস্থিত।

প্রাতি বছর এ মাঠে নিম্নলিখিত ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়

১. বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রা: বিদ্যা: ফুটবল টুর্ণামেন্ট

২. আন্ত: ক্রীড়া প্রা: বিদ্যা: ফুটবল প্রতিযোগিতা

৩. শীতকালীন জাতীয় স্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

৪. গ্রীস্মকালীন জাতীয় স্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

মেজর (অব:) আবদুল গনি

ব্যারিস্টার সফিক আহমেদ, মাননীয় মন্ত্রী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু-এমপি, সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী

শওকত মাহমুদ, সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব।

ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে আছে অনেক ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন যা আজো অনেকের কাছে অপরিচিত। বড়ধুশিয়া গ্রামে বিখ্যাত কামেল পীর বাঘাই শাহ ও করিম শাহের মাজার। জনশ্রুতি আছে, বাঘের পিঠে চেপে এ কামেল পীর আসেন এ স্থানে। আস্তানা গাড়েন গভীর জঙ্গলে। নদীর অপর পাড়ের গরীব এক পরিবারের শক্তিশালী নৌজোয়ান ডানপিটে ভাইকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে কাঠ কাটার উছিলায় নদীর পূর্ব পাড়ে ঘন জঙ্গলে নিয়ে আসে স্বার্থপর ভাইয়েরা। সন্ধ্যার অন্ধকারে তাকে ফেলে পালিয়ে যায় তার চার ভাই। নাম ছিল তার হাতিয়ার চাঁদশাহ। হযরত বাঘাইশাহ গভীর জঙ্গলে কুড়িয়ে পাওয়া হাতিয়ার চাঁদশাহকে নিয়ে আসেন নিজ আস্তানায়। চাঁদশাহের সঙ্গে বিয়ে দেন তার কন্যাকে। তার পুত্র করিম শাহ ও কণ্যার জামাতার বংশধর বর্তমানে বড়ধুশিয়া ও তার আশে পাশের দুটি মৌজায়।

শশীদল রেল স্টেশনের পশ্চিমে আছে বিখ্যাত পাঁচ পীরের মাজার। কথিত আছে হযরত শাহ জালাল (রা) কুমিল্লা (কুহ+মিলা=ইস্পিত স্থানের সন্ধান লাভ) হয়ে সিলেট যাবার পথে সংগীকে ইসলামের প্রচারের জন্য এখানে রেখে যান। শশীদল ইউনিয়নের হরিমঙ্গলে আছে বিখ্যাত মঠ ও হিন্দুদের তীর্থস্থান। জনশ্রুতিতে হরিমঙ্গলের পূণ্যস্থানে বন্ধ্যা রমণীরাও রম্যকানি- পুত্র-সন্তান লাভ করেন। প্রতি বৎসর চৈত্র মাসে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত অসংখ্য পূর্ণার্থীর আগমন ঘটে এ তীর্থ স্থানে।

চান্দলার শিব মন্দির সম্পর্কে জানা যায় হযরত শাহজালাল (রা) সিলেট যাবার পথে হযরত চাঁন্দ আলী শাহ নামক এক বিখ্যাত আওলীয়াকে ইসলাম প্রচারের জন্য রেখে যান। তিনি এক বিরাট পাথরে বসে ধ্যানমগ্ন থাকতেন। এ পাথর থেকে অলৌকিকভাবে আলোর রশ্মি আকাশমুখি হতো। পরবর্তী সমযে হিন্দুরা এটাকে শিবমু্‌র্িত জ্ঞানে পুজা করতো। এ অলৌকিক পাথরকে কেন্দ্র করেই বর্তমান চান্দলার শিব মন্দির গড়ে উঠেছে। আর হযরত চাঁদ শাহের নাম অনুসারে এ মৌজার নামকরণ করা হয়েছে চান্দলা।

Map of Brahmanpara - ব্রাহ্মণপাড়া