কি শোভা কি ছায়া গো, কি স্নেহ কি মায়া গো, কি আঁচল বিছায়েছ বটের মুলে নদীর কুলে কুলে । জাতীয় সংগীতের এই লাইন দুটি যেমন বাংলার অপরূপ রূপের চিত্রায়ন করে তেমনি প্রকৃতির স্নেহধন্য বুড়ি তিসতা নদীর তীরে খাঁটি উপমহাদেশীয় শিক্ষা, সৌম্য ও সভ্যতার প্রতীক বিশাল বট গাছের সুশীতল ছায়াতলে নাজিম খান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ অবস্থিত। ভারতবর্ষের দীক্ষা গুরু বৌদ্ধ দেব, অতীশ দীপঙ্কর প্রমুখ যেমন বটগাছের ছায়ায় বসে জ্ঞানের আলোক বর্তিকা ছড়িয়েছেন তেমিন করে সুদীর্ঘ ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল, আত্মনিবেদিত নক্ষত্ররাজী শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি এই অঞ্চলের সহস্র মানুষের মনের মনিকোঠায় জ্বালিয়ে দিয়েছেন মানবিক মহিমার এক হিরন্ময় দ্যুতি। আজ এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছড়িয়ে আছে দেশজুড়ে, বিশ্বময় নিজ নিজ ক্ষেত্রে রাখছেন কৃতিত্বের উজ্জ্বল স্বাক্ষর। অথচ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার আগের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। পঞ্চাশের দশকের হাতেগোনা মাত্র ৪-৫ জন মেট্রিক পাস করতে পেরেছিলেন দুরবর্তী কোন প্রতিষ্ঠান হতে। কুড়িগ্রাম মহকুমার রেকর্ডে সেই সময় নাজিমখান অঞ্চলটি ছিল অন্যতম পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। শীতের কোন এক সকালে মনির উদ্দিন কম্পাউডার হাজী আব্দুল লতিফ সরকার ও দেওয়ান মোস্তাফিজার রহমান (কলকাতা গভ: হাইস্কুলের শিক্ষক) নাজিমখান এম.ই স্কুল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। এর কিছুদিন পর উত্তর দলদলিয়া গ্রামে অবস্তিত কর্পুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভেঙ্গে এনে বর্তমান স্থানে এম.ই স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বর্গীয় সতেন্দ্র, সচিন্দ্র, কান্দ নন্দী এবং প্রয়াত সলেয়া মামুদ ছিলেন মুল জমি দাতা। এরপর যে শুভলগ্নে উচ্চ শিক্ষার আলো থেকে বিচ্ছিন্ন অথচ জ্ঞান অন্বেষা ও শিক্ষার প্রতি অনুরাগী কিছু দুরদর্শী প্রাকৃতজন এই বিদ্যালয়টি তাদের হৃদয় নিংড়ারানো আবেগ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই শুভ সময়টি হলো ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাস। এর পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাসে ১০/১২ জন ছাত্রী নিয়ে নবম শ্রেণির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন মো: শাহ আলম খন্দকার। শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত অনীল চন্দ্র ভাদর, বিষাদ চন্দ্র বর্মন, বাবু ননীগোপাল সরকার, আলহাজ্ব মশিউর রহমান, আ: আউয়াল প্রমুৃখ। ১ম ব্যাচের ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুস সালাম বসুনিয়া, উপাধ্যক্ষ(অব:), আলহাজ্ব মো: বদিউজ্জামান (শি:অব:), দেবেন্দ্র নাথ দাস, প্রধান শিক্ষক (অব), মো: আব্দুস ছামাদ, শিক্ষক (অব)।এই সময় মরহুম বাবু হিমাংশু সেনগুপ্ত, মরহুম ডা: রহমত আলী, মরহুম চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মাষ্টার, মরহুম গোলাম রহমান বসুনিয়া, মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী বসুনিয়া, মরহুম ডা: আব্দুল মজিদ সরকার, মরহুম আব্দুল গফুর খন্দকার, মরহুম লুৎফর রহমান পাটোয়ারী, মরহুম মহাব্বত আলী প্রামানিক, মরহুম আতাউর রহমান খন্দকার অনেক অবদান রাখেন